Social Icons

Sunday, 11 October 2015

মাশরুমের উৎপাদন পদ্ধতি

বীজ উৎপাদন পদ্ধতি

ল্যাবরেটরীতে সাধারণত  দুইটি পদ্ধতিতে মাশরুমের বীজ উৎপাদন করা যায়। যেমনঃ (১) টিস্যু কালচার পদ্ধতি (২) স্পোরকালচার পদ্ধতি। টিস্যুকালচার পদ্ধতিতে জাতের বিশুদ্ধতা বজায় রেখে রোগমুক্ত বীজ উৎপাদন করা সম্ভব। সুতরাং এখানে টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে মাশরুমের বীজ উৎপাদনের সংক্ষিপ্ত পদ্ধতি তুলে ধরা হল।
টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে মাশরুমের বীজ উৎপাদন পদ্ধতি ফ্লো চার্টঃ


পিডিএ মিডিয়া প্রস্তুত প্রণালীঃ
ল্যাবরেটরীতে টিস্যুকালচার করার পূর্বে পিডিএ মিডিয়া তৈরি করতে হবে। প্রতি লিটার পিডিএ মিডিয়ার জন্য নিম্নলিখিত উপকরণসমূহ প্রয়োজন।
১। গোলআলু – ২৫০ গ্রাম
২। এগার এগার – ২০ গ্রাম
৩। গ্লুকোজ – ২০ গ্রাম
৪। এসপারসিন – ২৫০ মিলিগ্রাম
পিডিএ তৈরিঃ
প্রথমে প্রয়োজনীয় পরিমাণ আলু নিয়ে উপরের ছাল ফেলে দিয়ে পাতলা করে টুকরো টুকরো করে ১ লিটার পানিতে ফুটাতে হবে। ৩০ মিনিট ফুটানোর পর আলু সিদ্ধ হলে পাতলা কাপড় দিয়ে ছেকে নিয়ে আলু ফেলে দিয়ে ঐ পানির সাথে উল্লেখিত পরিমাণ এগার এগার, গ্লুকোজ ও এসপারজিন মিশিয়ে আরও ১৫ মিনিট ফুটাতে হবে এবং মাঝে মাঝে নাড়ন কাঠি দ্বারা নেড়ে দিতে হবে। তারপর প্রতি টেস্ট টিউবে ১০ মিঃ লিঃ করে ভরে টেস্ট  টিউবের মুখ ছিপি দিয়ে ভাল করে বন্ধ করতে হবে। অতঃপর অটোক্লেভ মেশিনে ১২০-১২১ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ১.১-১.৫ কেজি/সেঃ মিঃ প্রেসারে ২০ মিনিট জীবাণু মুক্ত করে নিতে হবে। তারপর উক্ত টেস্ট টিউব গরম অবস্থায় ৪৫ ডিগ্রী কোণে কাত করে ২৪ ঘন্টার সময় রেখে দিলে তা জমাট বেঁধে পিডিএ মিডিয়া তৈরি হবে।

পিওর কালচারঃ
পূর্বে প্রস্তুতকৃত পিডিএ মিডিয়াতে সুস্থ্য, সবল, রোগমুক্ত ও জুভেনাইল (Juvinile) অবস্থার মাশরুম ফ্রুটিং বডি সংগ্রহ করে ক্লিন বেঞ্চ এর ভিতরে সার্জিক্যাল ব্লেড দ্বারা কেঁটে সরিষা দানার মত সামান্য টিস্যু নিয়ে পিডিএ মিডিয়াতে সাবধানে নিডেল দ্বারা ঢুকিয়ে দিতে হবে। এখানে উল্লেখ্য যে, এ সমস্ত কাজগুলি জীবাণুমুক্ত পরিবেশে করতে হবে। তারপর উক্ত টেস্ট টিউবকে ২০-২৫০ সেঃ তাপমাত্রায় ৭-১২ দিন রেখে দিলে দেখা যাবে টেস্ট টিউবের ভেতর সাদা মাইসিলিয়ামে পূর্ণ হয়েছে। তখনই এটা স্টক কালচারে পরিণত হবে। এই স্টক কালচারকে পিওর কালচার বলা হয়।

মাদার কালচারঃ
মাশরুম সেন্টারে প্রধানতঃ দুই পদ্ধতিতে মাদার কালচার তৈরি করা হয়। (১) কাঠের গুড়া পদ্ধতি (২) গম পদ্ধতি
কাঠের গুড়া পদ্ধতিঃ
কাঠের গুড়ার মাদার কালচার তৈরি করতে নিম্নলিখিত উপকরণাদীর প্রয়োজনঃ (৩০০ গ্রামের ৪টি মাদার কালচারের জন্য)

উপকরণের নামপরিমাণ
কাঠের গুড়া৪০০ গ্রাম
গমের ভূষি২০০ গ্রাম
ক্যালসিয়াম কার্বনেট৬০ গ্রাম
পানি  ৫০%

উল্লিখিত পরিমাণ কাঠের গুড়া, গমের ভূষি, ধানের তুষ, চুন ও পানি মিশ্রিত করে পিপি ব্যাগে ৩০০ গ্রাম করে ভরে প্লাস্টিক নেক দ্বারা বেঁধে কাঠের লাঠি দ্বারা ছিদ্র করে কটন স্টপার দিয়ে মুখ বন্ধ করে ব্রাউন পেপার দিয়ে ঢেকে রাবার ব্যান্ড দিয়ে বেধে দিতে হবে। তারপর অটোক্লেভ মেশিনে ১২০-১২১ ডিগ্রী সেঃ তাপমাত্রায় ও ১.১-১.৫ কেজি/সি.মি. প্রেসারে ১ ঘন্টাকাল জীবাণুমুক্ত করতে হবে। অতঃপর পিওর কালচার থেকে সামান্য মাইসেলিয়াম খণ্ড উক্ত প্যাকেটে জীবানুমুক্ত অবস্থায় ইনোকুলেশন করতে হবে। পরে প্যাকেটগুলি গ্রোথ চেম্বারে ২০-২৫ ডিগ্রী সেঃ তাপমাত্রায় ১২-১৫ দিন রাখার পর মাইসিলিয়াম দ্বারা পূর্ণ হলে তা মাদার কালচার হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এছাড়াও মাদার কালচার তৈরির জন্য গম, জোয়ার এবং খড় ব্যবহার করা যায়।
গমের মাদার কালচার তৈরি পদ্ধতিঃ
কাঠের গুড়ার পরিবর্তে গম দিয়ে মাদার কালচার তৈরি করা যায়। বর্তমানে অত্র সেন্টারে এ পদ্ধতিতেও মাদার কালচার প্রস্তুত করা হয়ে থাকে।
প্রথমে ভাল গম ময়লা আবর্জনা ঝেড়ে ১২-১৪ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর ভাল করে ধুয়ে সমপরিমাণ পানিতে ৩০-৪৫ মিঃ এমনভাবে সিদ্ধ করতে হবে যেন গম যথেষ্ট নরম হবে কিন্তু ফেটে যাবে না। বেশি সিদ্ধ করা চলবে না। তারপর পানি ঝরিয়ে ঠান্ডা করে প্রতি কেজি গমের সাথে ১০০ গ্রাম চুন (ক্যালসিয়াম কার্বনেট) মিশিয়ে গমকে ঝরঝরে করে নিতে হবে। পরে পিপি ব্যাগে ৩০০ গ্রাম ওজনের গম ভরে নেক লাগিয়ে রাবার ব্যান্ড দ্বারা বেঁধে দিতে হবে। তারপর তুলা দ্বারা মুখ এটে ব্রাউন পেপার দিয়ে ঢেকে রাবার ব্যান্ড দিয়ে বাঁধতে হবে। প্যাকেটগুলোকে অটোক্লেভ ১২০-১২১ ডিগ্রী সেঃ তাপমাত্রায় ও ১.১-১.৫ কেজি/সি.মি. চাপে এক ঘন্টা জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। উপরোক্ত নিয়মে পিউর কালচার দিয়ে ইনুকুলেশন করে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রেখে দিলে ১০-১৫ দিনের মধ্যে সাদা মাইসেলিয়ামে ভরে গেলেই মাদার কালচারে রূপান্তরিত হবে।

1 comment:

 

Sample text

Advertisement

Your Javascript ads here!

Sample Text

Sample Text

সত্যের সাথে আগামীর পথে এ আমার প্রত্যয়
 
Blogger Templates